এক
পশ্চিমা পণ্ডিত গবেষকদের
ভাষায়, মানুষের শ্রেষ্ঠত্ব নির্ভর করে তিনটি বৈশিষ্ট্যের ওপর। সে গুলো হল মন (Mind), স্মৃতি (Memory) এবং গভীর মননশীলতা (Reflection)। অন্যান্য জীব জন্তু প্রানির মধ্যে এই বৈশিষ্ট্যে বিদামান
থাকলেও তারা এ গুলোর সদ্ব্যবহার করতে সম্পূণ অসমথ্। কেননা একমাত্র মানুষই পারে
মন, মননশীলতা কে ভাষায় রুপ দান করতে।
উপরোক্ত মানবিক বৈশিষ্ট্যে
গুলোকে বিতর্কিত করে না তুললে,আমরা আমাদের মানব সমাজকে নিরপেক্ষ দৃষ্টিকোণ থেকে
বিচার করতে কিংবা মুল্যায়ন করতে অধিকতর সফল হবো ।
দুই
আমি এক জন প্রয়াত রাজনীতিবিদ
সম্পর্কে কিছু আভিজ্ঞতার কথা বর্ণনা করতে যাচ্ছি। তাই আমাকে অত্যন্ত বেদনাহত হৃদয়ে
বলতে হচ্ছে স্মৃতির প্রশ্নে, সহমর্মিতা প্রশ্নে, বাংলাদেশ তথা বাঙ্গালী জাতি
মারাত্তক আত্মঘাতী। গত একশ বছরে অবিভক্ত কিংবা বিভক্ত বাংলাদেশে যে সব মানুষ বৃহত্তরো কল্যাণমুখী শুভ কামনা
নিয়ে এসেছিলেন তাদের মধ্যে কয়জন কে আমরা স্মৃতিতে ধারণ করে আছি? তিন কুঁড়ি দশ বছর
অতিক্রান্ত আমার কলমের এই প্রশ্ন ধারালো বর্শার মতো সম্মুখে এসে দাড়ায় ।বর্তমান
বাংলাদেশের চলমান রাজনিতির পুরুষ মহিলাদের কাযকলাপ দেখে এমন প্রশ্ন জাগা
স্বাভাবিক।তাদের মুখ থেকে বহু ভাষার বক্তিতা বেরিয়ে এসেছে এবং আসছে। আন্ততঃ আমার
কানে এসে পৌছায়নি, তাদের মুখ থেকে বেরিয়ে এসেছে অতীতের নিবেদিত প্রান রাজনৈতিক
ব্যক্তিত্বদের কিছু নাম।আমাদের রাজনিতির অঙ্গন প্রাঙ্গনে একজন মিস্টার বুশ , একজন
মিস্টার টনি ব্লেয়ার কিংবা এ জাতীয় আন্তর্জাতিক ক্ষমতাধর ব্যক্তিদের যে ভাবে সমীহ
করে চলা হয় তাতে মনে হয় না যে আমাদের জাতীয় রাজনিতির কোনো ঐতিহাসিক মূল্য রয়েছ। এই
সব ভাবনা থেকে বলতে ইচ্ছে হয় আমি যেন দূর অতীতের কোনো এক শৃঙ্খলিত দাস। আমি যে রাজনীতিবিদের
কথা বলতে যাচ্ছি , নাম তার মোঃ আসাদ্দর আলী অথবা কমরেড আসাদ্দর আলী।মূলত কবি হয়ে
জন্মালেও আমার জীবনে সমাজের বিভিন্ন শ্রেণির আগ্রহী কিংবা কৌতূহলী মানুষের আগমন
ঘটে।ডান বাম মধ্যম কিংবা নিরপেক্ষ রাজনীতিকদের ও আমার সান্নিধৌ আমি পেয়েছিলাম। স্মৃতিতে
এখন গোধূলি নিবিরিত।কিছু নাম স্মরণ করছি।
এরা এসেছিলেন তরুন কিশোর কবি দিলওয়ার এর লেখা পাঠ করে।স্মৃতি হাতড়াতে গিয়ে বেশ
ঝামেলায় পরতে হল। তাই বহু জনের প্রতি শ্রদ্বা,ভালবাসা ও শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করে দুই
জনের নাম উচ্ছারন করব। এরা হলেন বালাগঞ্জ এর কমরেড আসাদ্দর আলী এবং রাজনগর এর কমরেড তারামিয়া। এই মুহূর্তে সদা প্রফুল্ল আসাদ্দর ভাই এর গুল গাল মুখ খানি মনে ভেসে
উঠলো।পঞ্চাশের দশকের শুরুতে তিনি কিছুকাল কলেজ ছাত্র হিসেবে ভাথখলায় অবস্তান
করেছিলেন।মরহুম জনাব নজির মিয়া মোক্তার এর বাইরের বৈঠকখানায় তার অবস্তান ছিল। আবার
অন্য দিকে ঐ বাড়ীটির একান্ত সন্নিকটে অবস্তান করতেন মরহুম জনাব ইব্রাহিম আলী। ইনি
উর্দু আরবি ফাসী ও ইংরেজী ভাষায় বিশেষ গুণান্বিত ছিলেন।সিলেট প্রেস ক্লাবের
প্রেসিডেন্ট প্রীতিভাজন মুকতবিস উন নূরের পিতা ইব্রাহিম আলী স্বল্পভাষী লোক ছিলেন।
তার অন্য এক পুত্র প্রয়াত ফয়জুনুর এর সাথে আমার একটি আন্তরিক সম্পর্ক ছিল।তাই
তাদের বাসায় আমার আসা যাওয়া ঘটতো। টিক মনে নেই কবে আসাদ্দর ভাই এর সাথে আমার মুখোমুখি
আলাপের সুযোগ ঘটে। খুব সম্বভ বন্দু বর ফয়জুনুর তার সাতে আমার পরিচয় করিয়ে দেয়। এই
পরিচয় সুত্র ধরে জানতে পারি আসাদ্দর ভাইও কবিতা চর্চা করেন। এখানে একটি তথ্য
অবশ্যই উল্লেক করতে হচ্ছে আমার লেখা লেখি শুরু অল্প বয়স থেকে হলেও ১২/১৩ বছর বয়সে
প্রথম প্রকাশিত হয় আমার কবিতা সাইফুল্লাহ হে নজরুল। সেই সময়ে অত্যন্ত প্রতিকুল
পরিবেশে থেকেও আমি হয়ে উটি বিদ্রোহী চেতনার বালক।
তিন
কোন দ্বিধা দ্বন্দের অবকাশ
নেই যে আসাদ্দর ভাই আমার কবি সত্তা কে মন প্রান দিয়ে ভালবেসেছিলেন এবং এই ভালবাসা
কখনো স্লান হয় নি। কোন মানুষই চীরস্থায়ী নয়। সিলেট বিভাগের প্রগতিশীল এবং গন
কল্যানকামী রাজনিতির ইতিহাসে তার নাম অবশ্যই সমহিমায় বিরাজ করবে।
(দিলওয়ার আসাদ্দর আলীর স্নেহধন্য গনমানুষের কবি)
তথ্য সূত্রঃ কমরেড আসাদ্দর
আলীর স্মরক গ্রন্থ থেকে সংগ্রহ
Post a Comment
0 comments
কমরেড আসাদ্দর আলী বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাসে এক অবিস্মরণীয় নাম।তিনি সারাজীবন মেহনতী মানুষের কল্যানে কাজ করে গেছেন।১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন এবং মহান মুক্তিযুদ্ধে তার অবিস্মরণীয় অবদান ছিল।তিনি কমিনিষ্ট আন্দোলনের পথিকৃত এবং বাংলাদেশের সাম্যবাদী দলের সাবেক সভাপতি ছিলেন।গণ মানুষের নেতা কমরেড আসাদ্দর আলীর স্বরনে একটি ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা মাত্র।সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।