Feature Label 3

0
কমরেড আসাদ্দর আলী স্মৃতি পরিষদ,কমরেড আসাদ্দর আলী পরিষদ,কমরেড আসাদ্দর আলী,আসাদ্দর আলী,কমরেড আসদ্দর আলী,আসদ্দর আলী,কমরেড আছদ্দর আলী,আছদ্দর আলী,মো: আতাউর রহমান,তাজ পুর ,সাম্যবাদী দল,comrade asaddar ali,asaddar ali,comrade assador ali,assador ali,sylhet


তখন আমরা ছোটো। বাম-ডান তো দূরের কথা, রাজনীতিও বুঝতাম না। সময়টা ষাট-একষট্টি সালের দিকে হবে। তাজপুরে আসাদ্দর আলী সাহেবকে ঘিরে এলাকার বিশিষ্ট ব্যক্তিরা উঠাবসা করতেন। আয়াত আলী, মুজেফর আলী, ছোরাব আলী, আজহার আলী, তছিম উল্লা, আব্দুস সামাদ প্রমুখ সমাজকর্তারা তাঁর পরামর্শ মেনে চলতেন সর্ববিষয়ে। আমরা ছোটরা শুনতাম এবং বিশ্বাস করতাম, আসাদ্দর আলী সাহেব দেশের একজন বড় নেতা। তিনি দেশের মঙ্গলের জন্য সবসময় কাজ করেন। আমরা দেখতাম বাইরে থেকে বড় বড় নেতারা তাঁর কাছে আসতেন। হাজী দানেশ, পীর হবিবুর রহমান, আব্দুল হামিদ, তারা মিয়া সহ বড় বড় নেতৃবৃন্দের আনাগোনা ছিলো তাঁর বাড়ীতে।
গ্রামীণ সম্পর্কে তিনি ছিলেন আমার চাচা। বয়স বাড়লে আমিও আমার বন্ধু-বান্ধবরা তাঁর আচার-আচরণে প্রভাবিত হই। সবসময় সমীহ করে চলতাম, তিনিও যারপর নাই স্নেহ করতেন। তাঁকে অনেকে ডাকতেন ‘কবি সাহেব’ বলে। তিনি কবিতা লিখতেন, গান লিখতেন। তিনি গণসঙ্গীত রচনা করতেন আর এতে সুরারোপ করতেন আজহার আলী। তাঁর গান গাইতেন আজহার আলী, হিমাংশু বিশ্বাস ভবতোষ, একটি গানের কলি আমার স্মরণ আছে-
                                                     ‘কাউয়ায় ধান খাইলোরে
                                                      খেদানোর মানুষ নাই।’
ভাষা আন্দোলন, আইয়ুব বিরোধী আন্দোলনে তিনি খুবই জোরালো ভূমিকা পালন করেন। যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনের সময়ও ফাতেমা জিন্নাহর সাথে আইয়ুব খানের নির্বাচনের সময় এ অঞ্চলে তিনি সংগঠক ও প্রচারক হিসেবে মুখ্য ভূমিকা পালন করেন।
জনাব আসাদ্দর আলী আর্থিকভাবে তেমন স্বচ্ছল ছিলেন না। অর্থোপার্জনের প্রতিও তাঁর তেমন ঝোঁক ছিলো বলে মনে হয় না। যতদূর জানি, উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করার পর তিনি ফরেষ্ট বিভাগে চাকরী নেন। কিন্তু এ চাকরী তাঁর মনঃপূত হয়নি। ফরেষ্টের চাকুরেদের দু’নম্বরী কাজ কারবারে বীতশ্রদ্ধ হয়ে তিনি চাকুরীতে ইস্তফা দেন।
এরপর হোমিওপ্যাথিতে মনোনিবেশ করেন। তাঁর পৈত্রিক জমি জমা ছিলো, ভাইয়ের সাথে ভাগ-বাটোয়ারায় ওগুলোর আয় ভোগ করতেন তিনি। ধন-সম্পদের প্রতি নিরাসক্ত আসাদ্দর আলী পরোপকারে নিবেদিত প্রাণ ছিলেন। সততা তাঁকে অতি উচ্চ শ্রেণীর মানুষে পরিণত করেছিলো। তাজপুর এলাকাবাসী তাঁকে অত্যন্ত শ্রদ্ধার চোখে দেখতেন। তাঁর কট্টর বাম-রাজনীতির প্রতি অনেকের আগ্রহ-বিশ্বাস না থাকলেও ব্যক্তি আসাদ্দর আলী ছিলেন এলাকাবাসীর নির্ভরতার প্রতীক। এলাকার কল্যাণ ও উন্নয়নে তিনি নিরলস ছিলেন। চেয়ারম্যান হিসেবে আমি তাঁকে একবার ধরলাম একটি রাস্তার জন্য তদবির করতে হবে। তিনি তদবিরে যেতে রাজী নন। মন্ত্রী সিরাজুল হোসেন খানের কাছে চিরকুট প্রদানে রাজী করালাম তাঁকে। কাজ হলো, একটি রাস্তার কাজে প্রচুর গম বরাদ্দ পেলাম।
তাজপুরের কৃতি সন্তান মরহুম আসাদ্দর আলীর স্মৃতিকে ধরে রাখার জন্য তাঁর সম্মানে তাজপুর অঞ্চলে রাস্তাঘাট ও প্রতিষ্ঠানাদির নামকরণ করার ইচ্ছে পোষ করা হচ্ছে তাঁর শুভানুধ্যায়ী মহল থেকে। এলাকার এক সন্তান ও আসাদ্দর আলী সাহেবের গুণগ্রাহী হিসেবে আমারও ইচ্ছে। সকলকে সাথে পেলে, সমর্থন-সহযোগিতা পেলে আমাদের এ গুণী সন্তানের স্মৃতিকে স্মৃতিকে ধরে রেখে তাঁর প্রতি সম্মান জানাতে কার্পণ্য করবো না।

মো. আতাউর রহমান : তাজপুর ইউনিয়নের দীর্ঘকালীন চেয়ারম্যান।

Post a Comment

কমরেড আসাদ্দর আলী বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাসে এক অবিস্মরণীয় নাম।তিনি সারাজীবন মেহনতী মানুষের কল্যানে কাজ করে গেছেন।১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন এবং মহান মুক্তিযুদ্ধে তার অবিস্মরণীয় অবদান ছিল।তিনি কমিনিষ্ট আন্দোলনের পথিকৃত এবং বাংলাদেশের সাম্যবাদী দলের সাবেক সভাপতি ছিলেন।গণ মানুষের নেতা কমরেড আসাদ্দর আলীর স্বরনে একটি ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা মাত্র।সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।