Feature Label 3

0

‘সরফউদ্দিন সাহেবের নামে একটি পাঠাগার করার জন্য তাঁর স্মৃতি রক্ষা কমিটি আমাকে আহবায়ক করে জায়গা যোগাড় করার জন্য বলা হয়- আমি ধোপাদিঘীতে কিছু জায়গা ঠিক করি এক ধোপার কাছ থেকে সরফউদ্দিন সাহেবের নামে। আমার রাখা স্থানে ... স্মৃতি রক্ষা কর।’
১৯৯০ সালের জানুয়ালি মাসের মধ্যভাগে আমি পৌরসভায় আমার কক্ষে বসে কাজ করছি। এমন সময় খবর পেলাম আসাদ্দর ভাই খুবই অসুস্থ, আমাকে জরুরী ভাবে দেখা করতে বলছেন। খবরটা পেয়ে কাজিটুলাস্থ তার তৎকালীন বাসায় গেলাম। সঙ্গে রফিকুর রহমান লজু। গিয়ে দেখলাম খাটের উপর শুয়ে আছেন। জিজ্ঞেস করলাম কেমন আছেন? তিনি হাতের ইশারায় বসতে বললেন। ভাবী বললেন তাঁর বাকশক্তি লোপ পেয়েছে এবং তাঁর অবস্থা দিন দিন খারাপের দিকে যাচ্ছে।
তিনি কি যেন বলতে চাচ্ছেন কিন্তু বলতে পারছেন না। তার খুবই কষ্ট হচ্ছে তবুও উপস্থিত স্বজনদের কি যেনো বললেন। ওরা জানালেন, আমাদের চা দিতে বলছেন। আমরা তাঁকে সান্ত¦না দিতে চাইলে তিনি আমাদের লক্ষ্য করে কি যেন বললেন- এক টুকরো কাগজ- একটা কলম তাঁর হাতে তুলে দিলে- তিনি আবার আমতা আমতা করে কি যেন বলতে চাইলেন। বুঝতে পারছিনা দেখে তাঁর পাশে থাকা একজন কিশোর তাঁর পিছনে বালিশ দিয়ে তাঁকে একটু উঁচু করে ধরলে তিনি অতি কষ্টে কাগজে আমাকে ও লজুকে উদ্দেশ্য করে কাঁপা কাঁপা হাতে যে কথাগুলো অতি কষ্টে লিখেছিলেন তাই আমি হুবহু উপরে শুরুতেই উপস্থাপন করলাম।
আসাদ্দর আলী সাহেব মৃত্যু শয্যায় আরেকজন গুণী ব্যক্তির নাম একটা লাইব্রেরী করার অনুরোধ করলেন- যে ব্যাক্তির হাতেই আমার জনসেবার হাতেখড়ি হয়েছিল। আমি অকপটে বলছি আমি চেষ্টা করছি আসাদ্দর ভাই, কিন্তু সফলকাম হতে পারিনি। দুঃখ হয় তাঁর সচল থাকাবস্থায় যদি তিনি বলতেন কিংবা আরো কিছু দিন যদি বেঁচে থাকতেন তাহলে তাঁর ইচ্ছাটা পূরণ করতে পারতাম। দলিল দস্তাবেজ যাদের কাছে ছিল তাদের কোন সাহায্য পাইনি এবং ঐদিনের পরে মাত্র ক-দিনই তিনি ইহলোকে ছিলেন। তার পরই জগতের মায়া কাটিয়ে তিনি চলে গেলেন। জীবনের শেষ লগ্নে এসেও নিজের কথা নয়, পরের কথা যিনি ভাবলেন তিনি কমরেড আসাদ্দর ভাই। আমরা ঘটা করে সিলেট পৌরসভা প্রাঙ্গণে শোকসভা করলাম। সিলেট ও ঢাকা থেকে অনেক নেতা আসলেন, বক্তৃতা দিলেন। তার জন্মমাটি তাজপুরেও ঘটা করে অনুষ্ঠানাদি পালন করা হয়েছে কিন্তু আমার উপর অর্পিত দায়িত্বের কিছুই করতে পারিনি। আমি মরহুম হামিদ ভাই, পীর হবিবুর রহমান সহ অনেকের সাথে কথা বলে, কারা আহবায়ক কমিটিতে ছিলেন বের করতে পারিণি এবং শরফউদ্দিন চৌধুরী পাঠাগারের জন্য ক্রয়কৃত জমির দলিলটির হদিস বের করতে অসমর্থ হয়েছি। তাই একজন আত্মত্যাগী প্রবীণ রাজনৈতিক আসাদ্দর ভাই এর কাছে জনমের মত দায়বদ্ধ থেকে গেলাম।
আমি পরে, অনেক পরে জানতে পেরেছি শুয়ে শুয়ে বাকহীন আসাদ্দর আলী আমাকে ও লজুকে উদ্দেশ্য করে চিরকুট লিখে শরফউদ্দিন সাহেবের নামে ধোপাদীঘিতে যে জায়গার কথা বলেন, সে জায়গাটি সাম্যবাদী দল সিলেট জেলা শাখার হেফাজতে আছে। সেখানে একচালা নড়বড়ে একটি টিনের ঘরে জেলা সাম্যবাদী দলের কার্যালয়ের সাইনবোর্ড রয়েছে। সাইনবোর্ডের নীচের অংশে ‘শরফউদ্দিন চৌধুরী ও কমরেড আসাদ্দর আলী স্মৃতি পরিষদ’ ও শোভা পাচ্ছে। আশ্বাসের ব্যাপার  যে, শরফউদ্দিন পাঠাগারের জন্য আসাদ্দর ভাই’র রেখে যাওয়া ভূমিটুকু বেহাত হয়নি। জায়গাটুকু আগলে রেখেছে আসাদ্দর ভাই’র সাম্যবাদী দল। আমরা আসাদ্দর ভাই’র ঘনিষ্ঠজন ও শুভানুধ্যায়ীরা উদ্যোগী হলে তার অগণিত ভক্ত ও গুণমুগ্ধদের সহায়তায় আসাদ্দর আলী ও শরফউদ্দিন চৌধুরীর স্মৃতি রক্ষার্থে মহৎ কিছু করতে পারি।
কমরেড আসাদ্দর আলী সাহেবের সাথে আমার হৃদ্যতার আলোকে স্মৃতিচারণমূলক কিছু কথা লিখছি...।
শরফউদ্দিন চৌধুরী সাহেব এক সময় সিলেটে ব্যবসায়ীদের একত্রিভূত করে কিছু করতে চেয়েছিলেন। সিলেট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রি গড়ার কাজে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন। তিনি বাম রাজনৈতিকদের সাহায্য-সহায়তা করে দুঃখী মানুষের জন্য কাজ করে গেছেন। মনে পড়ে ১৯৫৬ সালের বন্যার পরে একজন স্কুল পড়–য়া ছাত্র হিসাবে সিলেটের নিম্নাঞ্চলের গরিব দুঃখীদের শাড়ি ও লুঙ্গি বিতরণে আমি তাঁর সাথে ছিলাম। সিলেটের মানুষ যাতে তাকে ভুলে না যায় সে জন্যই আসাদ্দর আলী সাহেবের ইচ্ছা ছিল তার নামে কিছু করা।
যৌবনের ঊষালগ্নে তারুণ্যে ভরপুর উচ্ছল গতিময় জীবনক্ষণে নির্যাতিত, নিপীড়িত, মানুষের দুঃখ কষ্টে যখন নিজের অন্তরাত্মা ছটফট করত এবং এ অবস্থার পরিবর্তনের কথা যখন ভাবতাম- তখন পথ নির্দেশক হিসাবে যাদের পেয়েছিলাম তাঁদের মধ্যে কমরেড আসাদ্দর আলীও ছিলেন একজন, যার সাথে স্বচ্ছন্দে সহজ ভাবে কথা বলতে পারতাম, যার চিন্তা চেতনায় মুক্তির আশা খুঁজে পেতাম। অত্যন্ত সাদামাটা জীবনযাপন করতেন তিনি। বড়রা তাকে কবি সাব বলতেন। আমরা আসাদ্দর ভাই বলে সম্বোধন করতাম। তিনি আমাদের ছোট ভাইয়ের মতই ¯স্নেহ করতেন। খেটে খাওয়া মানুষের সাথে ছিল তার নিবিড় সম্পর্ক। রিক্সা শ্রমিক ইউনিয়ন, রুটি-বিস্কুট শ্রমিক ইউনিয়ন, ক্ষেতমজুর শ্রমিক ইউনিয়ন, হোটেল রেষ্টুরেন্ট কর্মচারী ইউনিয়ন সহ আরো বহু সংগঠনের মানুষের দিশারী ছিলেন তিনি।
আসাদ্দর আলী সাহেব ছাত্রাবস্থায় প্রগতিশীল ছাত্র রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত হন। নিখিল ভারত ছাত্র ফেডারেশনের সদস্য হন। পরবর্তীতে মুসলিম ছাত্র ফেডারেশন, তমদ্দুন মজলিশের সাথে সম্পৃক্ত হন।
মাহমুদ আলী, পীর হবিবুর রহমান, তাসাদ্দুক আহমদ, ফারুক আহমদ চৌধুরী, জনাব নুরুর রহমান, তারা মিয়া, দেওয়ান ফরিদ গাজী, সৈয়দ আকমল হোসেন, মোয়াজ্জেম হোসেন, জনাব আব্দুল হামিদ, শরফ উদ্দীন চৌধুরী প্রমুখ নেতাদের সাথে সম্পৃক্ত হয়ে রেফারেন্ডামে ঝাপিয়ে পড়ে মদনমোহন কলেজ থেকেই প্রাতিষ্ঠানিক লেখাপড়ার পাঠ চুকিয়ে ফেলেন। ১৯৪৮ সালে প্রগতিশীল মুসলিম লীগারদের সমন্বয়ে যে জোরদার ভাষা আন্দোলন গড়ে উঠে তাতে তার সক্রিয় ভূমিকা ছিল। আন্দোলন প্রতিবাদের মাধ্যমেই তিনি কমিউনিষ্ট পার্টির সংস্পর্শে চলে যান এবং প্রাথমিক সদস্য পদ লাভ করেন। আজীবন এই বিশ্বাসে অটল থেকে সদস্যপদ বহাল রাখেন।
পাকিস্তান সৃষ্টির পরে কমিউনিস্ট পার্টি কার্যত নিষিদ্ধ হওয়ার পর তার অনেক সাথী দেশ ত্যাগ করেন এবং কেউ কেউ আত্মগোপন করে পার্টির অনুমতিতে প্রথমে যুবলীগ, আওয়ামীলীগ এবং সবশেষে ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির সদস্য হিসাবে রাজনীতিতে অংশ নেন। তখনই তার সান্নিধ্যে যাওয়ার সুযোগ হওয়ায় তাকে আমি খুব কাছ থেকে দেখা ও তার সাথে কাজ করার সুযোগ পেয়েছিলাম। আমাদের বিস্কুট ফ্যাক্টরির হেডমিস্ত্রি মরহুম আব্দুল গফুর ছিলেন রুটি-বিস্কুট শ্রমিক সংগঠনের সভাপতি। তাই প্রায়শঃই তিনি আমাদের ফ্যাক্টরিতে আসতেন। মনে পড়ে রোজার মাসে গফুর মিয়া রোজা না রেখে কারখানার ভিতরে প্রকাশ্যে বিড়ি খাওয়ায় অন্যান্য শ্রমিকরা ক্ষিপ্ত হয়ে তার সাথে মারামারি করায় বাবা গিয়ে শ্রমিকদের পক্ষ নিয়ে গফুর মিয়াকে খুব মেরেছিলেন। রাতে আসাদ্দর ভাই আমাকে সাথে নিয়ে বাবার সাথে দেখা করে- একটা শান্তিপূর্ণ সমাধান করেছিলেন। অন্যান্য কারখানার শ্রমিকরা সভাপতির পক্ষ নিলেও আসাদ্দর ভাই বলেছিলেন আব্দুল গফুর শারীরিক অসুবিধায় রোজা থাকতে না পারলেও প্রকাশ্যে খাওয়াটা অন্যায় হয়েছে। তিনি অত্যন্ত শান্তভাবে কথা বলে সবাইকে মিলিয়ে দিলেন। তার সেদিনের আচরণে আমি মুগ্ধ হয়েছিলাম। আমার তরুণ মন কিন্তু গফুর মিয়ার পক্ষে ছিল। শেষ পর্যন্ত তার চাকুরি বহাল রইল। বাংলাদেশ হওয়ার পর গফুর মিয়া খুব অসুস্থ হয়ে পড়েন। বাবার অবর্তমানে তখন আমার ছোট ভাই মরহুম আনোয়ার কারখানার দায়িত্বে ছিল। আসাদ্দর ভাই আমাদেরকে দিয়ে ওর জন্য মেজরটিলায় কিছু জমি খরিদ করিয়ে দিয়েছিলেন। আসাদ্দর ভাই দেখতাম প্রায়ই ওদের খোঁজ খবর নিতেন। ওরা আসলে কাছাড় থেকে এসেছিল। গফুর মিয়া মারা যাওয়ার পর তার স্ত্রী-পুত্ররা জমি বিক্রি করে অন্য কোথাও চলে যায়। আসাদ্দর ভাই সব সময় ওদের কথা বলতেন। তিনি ধোপাদিঘীর পূর্বপাড়ে বাসায় থাকতেন। তার বাসাটাই ছিল সর্বহারাদের আশ্রয় কেন্দ্র, ব্যানার ফেষ্টুনে ভরপুর থাকত তার ঘর। অতি সাধারণভাবেই থাকতেন তিনি। গরীব সর্বহারা খেটে খাওয়া মানুষের জন্য কাজ করতে গিয়ে ছয়বার কারাবরণ করতে হয় তাকে এবং জীবনের বড় একটা সময় আত্মগোপন করে কাটাতে হয়।
তিনি একসময় যুবলীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন এবং ছাত্র ইউনিয়নের প্রতিষ্ঠাদের অন্যতম ছিলেন তিনি।
ন্যাপ দুভাগে ভাগ হলে তিনি মাওলানা ভাসানীর দলে চলে যান। পরে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর  ১৯৭২ সালে তৎকালীন কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য হাজী দানেশের সঙ্গে জাতীয় গণমুক্তি ইউনিয়ন প্রতিষ্ঠা করেন এবং কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সভাপতি মনোনীত হন। ১৯৭৭ সালে জাতীয় গণমুক্তি ইউনিয়ন ত্যাগ করে সাম্যবাদী দলে যোগদান করেন এবং দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মনোনীত হন। একসময় দলের সাধারণ সম্পাদকের পদ অলংকৃত করেন এবং দলের মুখপত্র সাপ্তাহিক গণশক্তির সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৭ সালে দলের সভাপতি এবং ১৯৮৯ সালে উপদেষ্টা মন্ডলীর চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।
কমরেড আসাদ্দর আলী ছিলেন পন্ডিত ব্যক্তি। প্রচুর পড়াশুনা করতেন। মার্কসবাদী দর্শনের উপর তার অগাধ পান্ডিত্য ছিল। তিনি ছিলেন বন্ধুবৎসল। প্রগতিশীলদের সাথে তাঁর ছিল গভীর সম্পর্ক। তিনি চীনপন্থি হিসাবে পরিচিত হলেও রাশিয়া পন্থিদের সাথে তার গভীর সম্পর্ক ছিল। পীর হবিবুর রহমান, কমরেড বরুণ রায়, হামিদ মিয়া এমনকি মুসলীম লীগ পন্থিদের সাথেও ছিল তার হৃদ্যতা। বার লাইব্রেরীতে গিয়ে সবার সাথে আলোচনা করতেন। তিনি বিশ্বাস করতেন কমিউনিস্টদের বিভাজন ভাঙ্গতে না পারলে সফলতা আসবেনা। তাই তিনি ঐক্যের জন্য জোর প্রচেষ্টা করে গেছেন। তিনি তার লক্ষ্য অর্জনের জন্য উচ্চ পর্যায়ের কমিউনিস্ট নেতাদের সাথে আলোচনার জন্য দুবার চীন ও একবার সোভিয়েত ইউনিয়ন সফর করেন।
সকল প্রগতিশীলদের সমন্বয়ে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তুলে সত্যিকার শোষণমুক্ত একটা দেশ গড়ার লক্ষে তিনি আমৃত্যু চেষ্টা করে গেছেন।
লেখালেখির মধ্যেই তার সাহিত্যানুরাগের পরিচয় পাওয়া যায়। তিনি সাংবাদিকতা করেছেন। সংবাদপত্র সম্পাদনা করেছেন এবং কবিতা লিখেছেন। মরহুম পীর হবিবুর রহমান, এডভোকেট মনিরউদ্দিন, কমরেড বরুণদা, মরহুম এডভোকেট জসীমউদ্দীন সাহেব তাকে কবি সাহেব বলে সম্বোধন করতেন।
তিনি তার ধোপাদিঘীরপারস্থ বাসায় প্রায় সময়ই শ্রমিক তথা খেটে-খাওয়া মানুষ দ্বারা পরিবেষ্টিত থাকতেন। তিনি ছিলেন শ্রমিক তথা খেটে-খাওয়া মানুষের একজন অভিভাবক। তাদের সুখে দুঃখে তাদের কাছে থাকতেন। অসুস্থ শ্রমিকের জন্য ডাক্তারের কছে যেতে দেখতাম।
আমার প্রতি তাঁর স্নেহের ও বিশ্বাসের একটা ঘটনা না বললে আমি অকৃতজ্ঞই থেকে যাব। ১৯৮৩ সালের শেষের দিকে সিলেট পৌরসভার নির্বাচনের তোড়জোড় শুরু হয়েছে। ১৯৮৪ সালের ১১ই ফেব্রুয়ারী নির্বাচন। সিলেটের সাধারণ মানুষ বিশেষ করে বিভিন্ন পাড়ার মুরব্বিয়ান আমাকে প্রার্থী হওয়ার জন্য জোর দিলেন। তৎকালীন ১৫ দলীয় ঐক্যজোট থেকে প্রার্থী দেওয়ার জন্য শ্রদ্ধেয় এডভোকেট মনির উদ্দিন সাহেব (পি.পি)কে ঠিক করলেন। আমার সম্পর্কে দ্বিমত হওয়ায় তারা পি.পি সাহেবকেই ঠিক করলেন। আমার ছাত্র জীবন থেকে শুরু করে তখন পর্যন্ত সব সহকর্মী, রাজনৈতিক শুভানুধ্যায়ী আমার বিপক্ষে অবস্থান নিলেন। হঠাৎ একদিন সন্ধ্যায় আমার সো মিলের ম্যানেজার মরহুম মিজান এসে আমাকে বলল -  আসাদ্দর আলী সাহেব বলেছেন তার সাথে একা দেখা করতে। আমি গেলাম আসাদ্দর আলী কুশলাদী জিজ্ঞেস করে বললেন- ‘আমি পারলাম না। তুমি পিছপা হইওনা- কাজ চালিয়ে যাও। আমার পক্ষে প্রকাশ্যে কাজ করা একটু অসুবিধা। আমার লোকজন তোমার কাজ করবে। কয়েকজনের সাথে পরিচয় করিয়ে দিলেন।’ নির্বাচনের আগে আরো দুদিন তার সাথে দেখা হয়েছে। তিনি পরামর্শ দিয়েছেন।
আমি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর তাঁর বাসায় গিয়ে কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেছি এবং আমার নানা উন্নয়ন কর্মকান্ডে তার পরামর্শ নিয়েছি।
আসাদ্দর ভাই তার সারল্য ও সুমধুর ব্যবহারের জন্য মতাদর্শেও উর্ধ্বে ছিলেন। তাকে সবাই ভালবাসত, তিনিও সবাইকে ভালবাসতেন।
                           
আ ফ ম কামাল (এডভোকেট) : সাবেক চেয়ারম্যান, সিলেট পৌরসভা, সাধারণ সম্পাদক, সিলেট ডায়াবেটিক সমিতি, সিলেট

Post a Comment

কমরেড আসাদ্দর আলী বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাসে এক অবিস্মরণীয় নাম।তিনি সারাজীবন মেহনতী মানুষের কল্যানে কাজ করে গেছেন।১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন এবং মহান মুক্তিযুদ্ধে তার অবিস্মরণীয় অবদান ছিল।তিনি কমিনিষ্ট আন্দোলনের পথিকৃত এবং বাংলাদেশের সাম্যবাদী দলের সাবেক সভাপতি ছিলেন।গণ মানুষের নেতা কমরেড আসাদ্দর আলীর স্বরনে একটি ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা মাত্র।সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।