Feature Label 3

0
কমরেড আসাদ্দর আলী স্মৃতি পরিষদ,কমরেড আসাদ্দর আলী পরিষদ,কমরেড আসাদ্দর আলী,আসাদ্দর আলী,কমরেড আসদ্দর আলী,আসদ্দর আলী,কমরেড আছদ্দর আলী,আছদ্দর আলী,সাম্যবাদী দল,comrade asaddar ali,asaddar ali,comrade assador ali,assador ali,,

মালতুছ সাহেবের বাসি ফতোয়াটি আজো ফেরী করে বেড়াচ্ছেন ধনতন্ত্রের পালের গোদারা। তাদের পোষ্য মোড়ল ও তথ্য পোষ্য বুদ্ধি ব্যবসায়ীরা দুনিয়ার দেশে দেশে তালে বেতালে কোরাস গেয়ে চলেছেন- কড়া হাতে জন্মনিয়ন্ত্রণ কর, না হয় দুর্ভিক্ষ মহামারী বা মহাযুদ্ধের লাল ঘোড়া দাবড়াও লোক সংখ্যা বৃদ্ধির কালো ভূতকে রুখে। অর্থাৎ নতুন মানুষের পৃথিবীর ভ্রমণ বন্ধ কর, না হয় মানুষ মেরে খাদ্য সমস্যার সমাধান করো। আমরা পূর্বের অধ্যায়গুলোতে সমস্যা সমাধানের অন্যান্য রাস্তা সম্বন্ধে আলোচনা করেছি। এবার সমুদ্রের দিকে ঘুরে দেখি। আড়াই লাখ মাইল দূরের চাঁদ, আরো অনেক দূরের গ্রহ-নক্ষত্র জয় করার জন্য উন্নত মস্তিস্ক জ্ঞানী-গুণীদের উৎসাহের সীমা নাই। কিন্তু মাত্র তিন থেকে সাত মাইল দূরের সমুদ্র তল জয় করার চেষ্টা তার তুলনায় কত কম। অথচ আকাশ থেকে সমুদ্র কিছু কম ধন দৌলতের মালিক নয়। সমুদ্রের পেট থেকে হল্যান্ড বা নেদারল্যান্ডের জন্ম হয়েছে। ভবিষ্যতে এইভাবেই সাগর মহাসাগর থেকে অনেক অনেক মাটির দেশ সৃষ্টি করা হবে। বিজ্ঞানীদের মতে খাদ্য, ধাতু ও তৈলের জন্য সমুদ্রই নির্ভরযোগ্য আশ্রয়। আনুমানিক গত দুই হাজার বছরে যত ধাতব পদার্থ ব্যবহার করা হয়েছে গত একশত বছর যত শক্তি (এনার্জি) ব্যবহার করা হয়েছে গত একদশকে তার চেয়ে বেশী খরচ হবে। এত ধাতু, এত এনার্জি আসবে কোথা থেকে। বিজ্ঞানীদের বিশ্বাস এই সমস্ত ধাতু ও শক্তির উৎস নিয়েই বসে আছে শক্তিমান সমুদ্র মহাসমুদ্র। উন্নত দেশগুলোর উন্নত মানুষ আকাশের দিকে চেয়ে চেয়ে চোখ কানা করছেন আর অনুন্নত দেশের তাদের অনুগামী, অনুচর ও অনুগতেরা চোখ বুজে উপোস করে মরছেন। সমুদ্রের দিকে কেহ ভাল চোখে তাকাচ্ছেন না। তাই দেখছেন না কি অফুরন্ত ভান্ডার আছে এর ভিতর।
কোন কোন মহল অনুগ্রহ করে আড়চোখে তাকাচ্ছেন। দেখছেনও যা দেখার। তাদের কাছ থেকে শুনুন মজার কথা। সমুদ্র বিজ্ঞানীদের মতে পানিতে ডুবে আছে ষাট লাখ টন সোনা, কোটি কোটি টন ম্যাঙ্গানিজ, নিকেল, কোবেল্ট, তামা প্রভৃতি ধাতু। কেবল লোহিত সাগরের পেটে ১২০০ কোটি টাকার সম্পদের খবর পাওয়া গেছে।
এখন বলেন ধাতু আর শক্তি খেয়ে ত আমরা বাঁচব না, খাদ্য কোথায় দেখাও।
বিজ্ঞানীরা বলেছেন সমুদ্রের খাদ্য উৎপাদন শক্তি পৃথিবীর শস্য ক্ষেতের চেয়ে হাজার গুণ বেশী। সমুদ্র তলের উদ্ভিজ এবং অন্যান্য খাদ্যদ্রব্য আজকের পৃথিবীর মানুষের স্বপ্নকে হার মানাবে।
অন্য আরেকটি সাধারণ খাদ্যের কথা বলি, মানুষ মজা করে খায়। খুব প্রোটিন আছে তার মধ্যে। খাদ্যটির নাম মাছ। বর্তমানে ভারত মহাসাগর থেকে বার্ষিক বিশ টন মাছ ধরা হয়। একটি মামুলি অনুমানে জানা গেছে একটু বিজ্ঞানসম্মত পন্থা অবলম্বন করলে বর্তমান সাজ-সরঞ্জাম দিয়েই এর দশগুণ বেশী মাছ ধরা সম্ভব। কেবল আরব সাগর থেকেই বছরে এক কোটি টন মাছ পাওয়া যাবে। অর্থাৎ আরব সাগর তীরের মানুষ বার্ষিক ৭৫০ কোটি টাকার বিদেশী মুদ্রা কেবল মাছ থেকেই লাভ করতে পারে। বাংলার অধিবাসীরা বর্তমানে খাদ্যদ্রব্যের শতকরা একভাগ মাছ থেকে পায়। এর পরিমাণ আরো অনেক বাড়ানো যায়। গত বিশ বছরে মাছ উৎপাদন বেড়েছে মাত্র ১৫ মিলিয়ন টন। সমুদ্রে মাছ চাষের (একুয়া কালচার) সম্ভাবনার দিগন্ত আজ উজ্জ্বলতর হচ্ছে। স্বাভাবিকভাবে সমুদ্রোপকুলের প্রতি বর্গ মাইলে বর্তমানে যেখানে বার্ষিক মাত্র দশ টন মাছ সংগ্রহ করা সম্ভব। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার মতে দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার ১,৪০,০০০ (এক লাখ চল্লিশ হাজার) বর্গ মাইল জায়গায় একুয়া কালচারের সাহায্যে মাছের চাষ করা সম্ভব। সমস্ত পৃথিবীতে আজ যে পরিমাণ মাছ পাওয়া যায় কেবল ঐ জলাশয় থেকে তার চেয়ে বেশী পরিমাণ মাছ পাওয়া যাবে। অর্থাৎ কেবল মাছের চাষ হলেই মালতুসের ফতোয়ার গতি ধরে বিশ্বের খাদ্য ভান্ডার ফতুর হয়ে যাচ্ছে না। তবে বুদ্ধিমানরা প্রশ্ন করবেন সমুদ্র জয় করা কি আর চাট্টিখানি কথা? অধিকাংশ সমুদ্রই ২০,০০০ ফুটের বেশী গভীর, অথচ সমুদ্রের তলে মাত্র ৩০০ ফুট নামনেই প্রকৃত পক্ষে কোন কিছু দৃষ্টি গোচর হয় না। সূর্যের আলো এর অধিক নীচে যায় না। তাছাড়া এর নীচে কোথাও আছে প্রচন্ড চাপ, কোথাও বা আছে কল্পনাতীত শৈত্য। শ্বাস-প্রশ্বাস যে কোন মুহূর্তে বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
কিন্তু চাঁদ থেকে পাথর নিয়ে আসতে বা মঙ্গল গ্রহের ছবি তুলে আনতে যা যা করা হয়েছে সমুদ্রের তল থেকে মানুষের অসীম জীবনের অনন্ত সম্ভাবনার দ্বার খুলতে গিয়ে তার কতটুকু করা হয়েছি। এটম বোমা, হাইড্রোজেন বোমা এবং জন্মনিয়ন্ত্রনের পিলসহ মানুষ মারার যে যে কলা-কৌশল আজ পর্যন্ত আবিষ্কার করা হয়েছে তার তুলনায় মানুষকে বাঁচানোর জন্য সমুদ্র জয়ের কিছুই করা হয়নি। শুনেছি দশ কিলোগ্রাম বিষ ব্যবহার করে গোটা মানব জাতিকে ধ্বংস করা বা পৃথিবীর মহাচ্ছাদন ফুটো করে সূর্যের অতিরশ্মির পথ করে সমস্ত পৃথিবী ভস্ম করার শক্তি রাখেন ‘মারন’ বিজ্ঞানীরা। সমুদ্রের নীচ থেকে জীবনের মানিক জয় করে আনার শক্তি তাদের নাই? আছে কিন্তু ওরা আজ কাদের জন্য বুদ্ধি খরচ করেছেন। কোন্ সমাজের নড়বড়ে ভিত জোড়াতালি দিয়ে টিকিয়ে রাখার জন্য আজ তারা সর্বশক্তি নিয়োগ করছেন?

তাজপুর ডিগ্রি কলেজ বার্ষিকী ১৯৯৬-৯৭, ‘অঙ্গন’ থেকে সংকলিত।

Post a Comment

কমরেড আসাদ্দর আলী বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাসে এক অবিস্মরণীয় নাম।তিনি সারাজীবন মেহনতী মানুষের কল্যানে কাজ করে গেছেন।১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন এবং মহান মুক্তিযুদ্ধে তার অবিস্মরণীয় অবদান ছিল।তিনি কমিনিষ্ট আন্দোলনের পথিকৃত এবং বাংলাদেশের সাম্যবাদী দলের সাবেক সভাপতি ছিলেন।গণ মানুষের নেতা কমরেড আসাদ্দর আলীর স্বরনে একটি ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা মাত্র।সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।